পিএইচডি!
বাংলাদেশে পিএইচডি-কে যেভাবে দেখা হয়, আসলে সেটা তেমন কিছুই না। পিএইচডি হলো গবেষণার হাতেখড়ি। একজন শিক্ষার্থী সে সময়ে, গবেষণা কী করে করতে হয় সেটা শেখে। ডক্টরেট ডিগ্রীকে দেশের লোকজন (সিংহভাগ) যেভাবে তাবিজের মতো গলায় ঝুলিয়ে রাখার চেষ্টা করে, এটা আসলে সেটা তেমন কিছুই না। আমি যখন স্টকহোম ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডি করি, তখন সকাল-বিকলা ষাট-সত্তর জন সহকর্মীর সাথে দেখা হতো। তারা সবাই পিএইচডি-পোস্টডক করতো। সে ডিপার্টমেন্ট চলতো শুধু গবেষক দিয়ে। তাদের নব্বই শতাংশের বয়স ২৪-২৮ বছর।
গবেষণা একটা পেশা। এই ধারণাটাই আমাদের দেশে গড়ে উঠেনি। গবেষণা যারা করে তারাই গবেষক, উদ্ভাবক, বিজ্ঞানী। যেহেতু এটা একটা পেশা, তাই এর প্রস শুরু করতে হয় কাঁচা যৌবন থেকেই। সারা দুনিয়ায় গবেষণার শিক্ষাটা শুরুটা হয় ব্যাচেলর থেকে। তারপর পিএইচডির সময় (৩-৬ বছর) গবেষণা শিখতে হয় পাকাপোক্তভাবে। (আমাদের দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চার বছরের স্নাতক আছে। অথচ, সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানে স্নাতক পর্যায়ে কোন গবেষণার সুযোগ নেই। বিষয়টা খুবই দুঃখজনক।)
পিএইচডির সময় একজন শিক্ষার্থীকে যে কয়েকটি বিষয় অবশ্যই ভালোভাবে শিখতে হয়: ০১. একটা প্রজেক্ট কী করে ডিজাইন করতে হয়। ০২. সে প্রজেক্ট থেকে পর্যাপ্ত/সন্তুষ্টজনক ফলাফল দাঁড় করানো। ০৩. প্রজেক্ট শেষে সেটাকে আর্টিকেল আকারে লেখা ও জার্নালে প্রকাশ করা। ০৪. নিজের কাজকে উপস্থাপন করতে শেখা এবং ফান্ড/গ্রেন্টের জন্য রিসার্চ প্রপোজাল লিখতে শেখা। এই কয়েকটি বিষয় যতো স্মার্টভাবে এবং গভীরভাবে শেখা যায়, ততোই ভবিষ্যতের পথ সুগম হয়।
পিএইচডির সময় ভালো জার্নালে পাবলিকেশনের চেয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ হলো, ভালোভাবে কাজ শেখা। নতুন নতুন আইডিয়া উদ্ভাবন করতে শেখা। যে কোন বিষয়কে বিভিন্নভাবে চিন্তা করতে পারা। অসমাধানকৃত (Unsolved) বিষয়ের সমাধান খুঁজার চেষ্টা করা। কোন বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করতে শেখা। মানুষ যখন একটা যৌক্তিক প্রশ্ন করতে যায়, তাকে সে বিষয়টি নিয়ে ভালোভাবে জানতে হয়। প্রশ্ন করার ক্ষমতা মানুষকে স্মার্ট করে। নানান দৃষ্টিকোন থেকে একটি বিষয়বস্তুকে ভাবতে শেখায়।
পিএইচডির সময় সে কাজগুলো বেশি বেশি করতে হয়: ০১. প্রচুর আর্টিকেল পড়া। ০২. বড়ো বড়ো গবেষকদের কাজ সম্পর্কে ভালোভাবে জানা ও বুঝা। ০৩. সুযোগ মতো বিজ্ঞানী ও খ্যাতনামা গবেষকদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করা এবং তাদের লেকচার শুনা। ০৪. ছোট হোক বড়ো হোক, বিভিন্ন আইডিয়া জন্ম দেয়ার চেষ্টা করা। ০৫. সহকর্মীদের সাথে প্রচুর আলোচনা করা। মানুষ যখন অন্যের সাথে আলোচনা করে, তখনই তার দুর্বলতা সহজে উপলব্ধি করতে পারে। গবেষণা করতে গেলে ইগো নিয়ে আত্মকেন্দ্রিক হওয়া যায় না। এটা বিনাশী ও আত্মঘাতী।
……….
রউফুল আলম
নিউইর্য়ক।
এই পদক্ষেপ গুলো বাংলাদেশের সরকার কেন নিচ্ছে না। বুঝিনা! যেখান আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ু বহুদূর এগিয়ে গেছে সেখানে বাংলাদেশ মুখ থুবড়ে পরে আছে
ReplyDelete